পৃথিবীর পথে বাংলাদেশ
আমেরিকায় সাইকেল চালানোর তাগিদটা পুরনো। অনেক দিনের সাধ আমেরিকান ড্রিম বুঝেশুনে আসার। স্বপ্নের দেশ আমেরিকায় গেলে মানুষ আর ফিরে আসতে চায় না, সে-স্বাদ চেখে দেখার বাসনা অনেক দিনের। আটলান্টিকের ওপারের ওই দেশে শত বছর ধরে মানুষ জীবিকার জন্য হোক আর ভাগ্যান্বেষণেই হোক, গিয়েছে Ñ থিতু হয়েছে। আমেরিকা তাই পৃথিবীর সবচেয়ে পরিচিত দেশ।
আমার কাছে সাইকেল চালানো জীবনের মতো। জীবন যেমন সবসময় একরকম নয়, সাইকেলে প্যাডেল মারার কাজটাও প্রায় একই রকম Ñ আমার কাছে। জীবন সহজ নাকি কঠিন সে আমাদের ব্যক্তিগত অনুধাবন, অবশ্য পরিস্থিতির ওপরও নির্ভর করে অনেকটা। সে-হিসেবে আমার জীবনপথ সরলই ছিল, যদি আমি প্রচলিত পথে এগোতাম। কিন্তু‘দেখতে চাই ধরণি’ টাইপের রোমান্টিসিজমে বদলে যায় জীবনের গতিপথ। চাকরি ছাড়ি দুনিয়া দেখার লোভে। তাই প্রকৌশলী হয়ে আমেরিকা যাওয়ার চেয়ে সাইকেলে আমেরিকা যেতেই মন বেশি সায় দিয়েছিল। চুলোয় গেল ১৬ বছরের বইপত্রের বিদ্যা। সাইকেলে সওয়ারি হওয়ার শুরু জমানো টাকা আর বন্ধুবান্ধবের কাছে করা ধারের বোঝা কাঁধে নিয়ে। প্রথম শুরুর সাত বছর পর এবার আমেরিকার পশ্চিম থেকে পূর্ব উপকূল পর্যন্ত সাইকেলযাত্রা। ভিসা পাওয়ার গল্পটা অনেক বড়। সে-গল্প আমাদের অনেকের মতোই। তাই না করাই ভালো। ২০১১-তে এক কনফারেন্সে পোস্টার প্রেজেন্টেশনের আমন্ত্রণ এলো। মিলল ভিসা। চললাম আমেরিকা।