
বর্ণসন্তান
বর্ণসন্তান উপন্যাসটি ১৯৯৭-৯৮-এর ইংল্যান্ডের প্রেক্ষাপটে লেখা। দুনিয়া কাঁপানো ব্রিটিশ উপনিবেশের নিজস্ব সীমানা কালক্রমে নানা জাতি-ধর্ম-ভাষা-সংস্কৃতির আধারে পরিণত হয়ে ওঠে। বিচিত্র জনসংস্কৃতির পরিপ্রেক্ষিত এই দেশ একদিনেই সেই অবস্থায় পৌঁছায়নি। দূরত্ব, ঘৃণা, সংঘাত, এমনকি সংঘর্ষ এইসব ব্যাকরণের মধ্য দিয়ে এককালের বিলেত আজ এক মিশ্র-সংস্কৃতির বহুজাতিত্বে উপনীত। বাঙালি জনগোষ্ঠী ইংল্যান্ডের রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক বাস্তবতায় আজ একটি স্বীকৃত উপাদান। উপন্যাসটিতে আছে বর্ণবাদের করাল চেহারা এবং তার বিপরীতে ভালোবাসার আশ্চর্য সমীকরণ। বাংলাদেশের একটি ছেলে জীবনের ক্রূরতায় ছিটকে গিয়ে পড়ে সেদেশে। শুধু তাই নয়, শেকড়ছিন্ন তার সত্তা এক অদ্ভুত মাটির রস নিংড়ে এমন একটা জায়গায় পৌঁছায় যেখানে তার অস্তিত্ব শূন্য থেকে যাত্রা করে অজ্ঞাত এক পূর্ণতার অন্বেষণে। কিন্তু তার সেই অন্বেষা করুণ পরিণতির শিকার। তাকে ভালোবাসতো যে মেয়েটি, বহু দূর দেশের সংস্কৃতিবাহিত সে-ও জানে না গায়ের রং ভিন্ন হলে বা জাতিত্ব অপর হলেই কেন খুন হয় মানুষ। টেমস নদী বয়ে যায়, যেমন বয়ে যেত অনাদিকাল থেকে। তীরে আছড়ে পড়া তার ঢেউ কি অব্যক্ততা-ক্ষোভ এসবের অনুবাদ, সেটা কে জানে তা-ও হয়তো জানা থাকে না কারো। কেবল প্রশ্নচিহ্ন হয়ে হাওয়া ঘুরপাক খেতে থাকে বিগবেনের ধারে কি ব্রিকলেনের সীমানায়।