
রামকৃষ্ণ মিশন রোডে বসন্ত
প্রগতির ছুতোয় চলছে সবরকম বাড়াবাড়ি। বুলডোজারের গুঁতোয় ভাঙছে পুরোনো সব ঘরবাড়ি। তার সাথে হারিয়ে যাচ্ছে স্মৃতি, ঐতিহ্য, অনেক কিছু। তবে এসবের কিছু কিছু ফেরত আসছে গল্প উপন্যাসে। শহর ঢাকার হারিয়ে যাওয়া স্থাপত্য আর সমাজবাস্তবতার করুণ চিত্র ফুটে উঠেছে ‘রামকৃষ্ণ মিশন রোডে বসন্ত’ উপন্যাসে। লেখক ইকতিয়ার চৌধুরীর কলমে ধরা পড়েছে শহর নামে এক কঙ্কালের চিত্র।
বলা চলে একটি নারীবাদী উপন্যাস ‘রামকৃষ্ণ মিশন রোডে বসন্ত।’ বিশাল চরবাংলার ভূমিদস্যুদের মতো বর্তমান শহুরে জীবনেও আবির্ভূত হয়েছে একশ্রেণির ভূমিদস্যু। কখনও রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী, কখনও ব্যক্তিরূপে প্রতিয়মান হয় এরা। পেশিশক্তি ও নানা অপকৌশলে যারা ক্রমাগত জবরদখল করে চলেছে অন্যের জায়গাজমি। এ গল্পের হাজি চান মিয়া কিংবা জুলকার নাইন সেই দস্যু গোত্রের প্রতিভূ। তাদের দুর্বল প্রতিপক্ষ পঁচিশ বছরের তরুণী কুসুমলতা। তবে গল্পের ঘাত-প্রতিঘাতে সেও শক্তি সঞ্চয় করে লড়াই করার, সবল হয়ে ওঠে। ধ্বংসের বিপরীতে মানবিকতার লড়াইয়ের কিংবা প্রবল প্রতিপক্ষ পুরুষের বিপরীতে দুর্বল নারীর নায়ক হয়ে ওঠার গল্প। আর এ গল্পে কুসুমলতাকে এভাবে নিপীড়নের বিপরীতে দাঁড় করিয়ে দেন লেখক।
পেশাগত জীবনে সর্বশেষ রাষ্ট্রদূত ও জাতিসংঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ছিলেন ইকতিয়ার চৌধুরী। তবে কথাসাহিত্যেও তাঁর প্রতিভার স্ফূরণ ঘটেছে। ভ্রমণকাহিনী, গল্প, উপন্যাস লিখেছেন বিস্তর। মানুষ এবং মানুষের সমাজ তাঁর কথাসাহিত্যের প্রধাণ উপজীব্য। ‘রামকৃষ্ণ মিশন রোডে বসন্ত’ তার ব্যতিক্রম নয়। ২০১১ সালে সাপ্তাহিক ২০০০-এ প্রথম প্রকাশের পর ২০১৫ সালে বেঙ্গল পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত হয় উপন্যাসটি।