
Alaknanda Patel
অলকনন্দা প্যাটেল বিষয়ে গবেষণার পাশাপাশি ইতিহাস ও সংগীত বিষয়ে সমান আগ্রহী। বর্তমানে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভস, আহমেদাবাদ-এ দায়িত্ব পালনরত। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করেছেন দেশ-বিদেশের বিভিনড়ব বিদ্যায়তনে তিনি শিক্ষাগ্রহণ করেছেন। ঢাকার ইডেন স্কুল (’৪৭-এর পূর্বে) থেকে শিক্ষাজীবন শুরু। শিক্ষাগ্রহণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি, ইংল্যান্ডের ডারটিংটন কলেজ অফ আর্টস, ভারতের জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটিতে স্কুল অফ ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ বিভাগসহ বিভিনড়ব বিদ্যায়তনে। তিনি প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ অমিয়কুমার দাশগুপ্তের কন্যা। অলকনন্দার লেখায় ইতিহাস-সন্ধানের প্রয়াস যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত ও সমসাময়িক বাস্তবতায় তার বিশ্লেষণ। অর্থনীতির ছাত্রী হলেও ইতিহাসের প্রতি ঝোঁক বেশি। তাঁর লেখায় ফুটে ওঠে দেশভাগের বেদনাবিধুর স্মৃতি। একই সঙ্গে আন্দোলিত হন তিনি পুরনো স্মৃতি রোমন্থনে। পাঠকের সামনে ধরা দেয় সে সময়ের সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতির নানা প্রবণতা। দেশ-বিদেশের পত্রপত্রিকায় গবেষণাসহ ইতিহাসনির্ভর লেখা বেরিয়েছে তাঁর। রয়েছে একাধিক বই। শুধু লেখালেখি নয়, তিনি সংগীতেও পারদর্শী। গান শিখেছেন রামপুর ঘরানার ওস্তাদ নিসার হুসেন খাঁ ও ওস্তাদ হাফিজ আহমেদ খাঁ সাহেবের কাছে। সংগীত বিষয়ে, বিশেষ করে ‘ঘরানা’ রীতি নিয়ে, কাজ করেছেন তিনি। এছাড়া সংগীতজগতে নারীর অবস্থান বিষয়েও গবেষণা করেছেন। শখ - ভ্রমণ করা, চিত্রকলা দর্শন ও সংগ্রহ, ইতিহাস পাঠ ও গবেষণা এবং আত্মজীবনী রচনা। অলকনন্দা প্যাটেলের জন্ম ঢাকার গে-ারিয়ায়। বাংলাদেশে কৈশোর ও শৈশবের যে স্মৃতি তা এখনো বয়ে বেড়ান। বরিশাল ও ঢাকা তাঁর স্মৃতিতে এই অশীতিপর বয়সেও অম্লান। প্রবাদপ্রতিম অর্থনীতিবিদ অমিয় দাশগুপ্ত তাঁর পিতা এবং স্বামী আই জি প্যাটেল ভারতবর্ষের রিজার্ভ ব্যাংকের গর্ভনর এবং লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্সের ডিরেক্টর ছিলেন। অলকনন্দা প্যাটেল নিজেও অর্থনীতির চর্চা ও সাধনার মধ্য দিয়ে হয়ে উঠেছেন খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ। বর্তমানে যুক্ত আছেন সেন্টার ফর ডেভলপমেন্ট অলটারনেটিভ, আহমেদাবাদের সঙ্গে। শাস্ত্রীয় সংগীত ও সাহিত্যে অনুরাগ তাঁর জীবনবোধের সঙ্গে নিবিড়ভাবে মিশে আছে। শাস্ত্রীয় সংগীতের অনুশীলন অলকনন্দাকে করে তুলেছে সংগীতবিশেষজ্ঞ। সামাজিক কর্মকা-ে নিরলস প্রয়াস তাঁকে বিশেষ এক ব্যক্তিত্ব দান করেছে। বিশ্বনাগরিক অলকনন্দার পদচারণা ভুবনময় হলেও বাংলাদেশে তাঁর যে শেকড় তা এই খ্যাতিমান ও রুচিমান মানুষটিকে আমাদের কাছে বিশেষভাবে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। পৃথিবীর পথে হেঁটেতে উঠে এসেছে ত্রিশ-চল্লিশের দশকে তাঁর পারিবারিক পরিম-লের ছবি ও তৎকালীন বাংলাদেশের শিক্ষা ও সংস্কৃতির আবহ। মননের ঔজ্জ্বল্যে এই অনন্য গ্রন্থটি শুধু স্মৃতিকথা নয়, তাঁর রচনার গুণে, জীবনদৃশ্যে ও শৈলীতে বাংলা সাহিত্যে এ এক অনন্য সংযোজন।