বেঙ্গল পাবলিকেশন্‌‌স

মুক্তি ও স্বাধীনতার কবিতা

Price
175 BDT

Published on
January 2016

ISBN
9789843354082

Category


নিঃসন্দেহে মুক্তিযুদ্ধ বাঙালির ইতিহাসে সর্বোত্তম ঘটনা । বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির অস্তিত্ব জড়িয়ে আছে মুক্তিযুদ্ধের সাথে। তাই স্বভাবতই এ ঘটনাকে ঘিরেই তৈরি হবে এ জাতির মহত্তম শিল্প-সাহিত্য। যেখানে উঠে আসবে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ের ইতিহাস, স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম, আত্মত্যাগ এবং গৌরবগাথা। সেই ধারাবাহিকতায় মুক্তিযুদ্ধের নানান দিক নিয়ে রচিত হয়েছে অনেক গল্প-উপন্যাস এবং কবিতা। আর বিশাল সেই সম্ভারে উল্লেখযোগ্য সংযোজন কবি কামাল চৌধুরীর ‘মুক্তি ও স্বাধীনতার কবিতা’ নামক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক কবিতার বইটি। এই বইয়ের কবিতাগুলো ধারণ করে আছে মুক্তিযুদ্ধের শাশ্বত যে আবেদন তার সবটুকু। সেই সাথে কবিতা যে চিরায়ত ইঙ্গিতময়তার কথা বলে তাও এই কবিতাগুলোয় দুষ্প্রাপ্য নয়। সাধারণত বিষয়ভিত্তিক কবিতা লিখতে গেলে অনেক সময় কবিতা কেবল বিষয়সর্বস্ব হয়ে পড়ে। সেখানে কবিতা খুঁজে পাওয়া অনেক সময় কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু কবি কামাল চৌধুরীর এই বইয়ের কবিতাগুলোর ক্ষেত্রে তা হয়নি। নির্দিষ্ট বিষয়ের প্রতি নিবেদিত হয়েও এই কবিতাগুলো কবিতা হয়ে উঠেছে। সেই সাথে কবিতায় মুক্তিযুদ্ধের যে ভাষ্য উঠে আসা দরকার তাও অক্ষুণ্ন রয়েছে। এই যেমন আমরা প্রথম কবিতাটা পড়তে গিয়ে দেখি, ‘মুক্তিযোদ্ধারা যদি মৃত্যু এবং বারুদের ঘ্রাণে ভালোবাসে আমার কবিতা/আমি সেদিন বলব/সমস্ত প্রর্থনা আজ শেষ হয়েছ/জন্মের ঋণ আমি স্বীকার করেছি।’ নিজের কবিতাকে এখানে কবি কামাল চৌধুরী মাতৃভূমি, মুক্তিযুদ্ধ এবং মানুষের প্রতি একধরনের ঋণশোধ হিসেবে দেখছেন। ঠিক একই কথা তিনি আবার বলেছেন ‘জন্মদিনের কবিতা’ নামক আরেকটি কবিতায়ও। সেখানেও তিনি জানিয়েছেন, ‘প্রিয় বোন, প্রিয় ভাই/আমি শুধু জন্মের কাছে ঋণী, শেকড়ের কাছে ঋণী’। নিজ ভূমির কাছে ঋণী এই কবি কেবলই নত হতে চান পতাকা উড়ানোর দিনে।এছাড়া তাঁর কবিতায় উচ্চারিত হয়েছে তারুণ্যের জয়গানও। কবি ক্রাচে ভর দিয়ে হেঁটে আসা যুবককে দেখেছেন স্বাধীনতার প্রতিচ্ছবি হিসেবে। বলেছেন, তার প্রতি যেন ভুল করে কোনোদিন করুণা করা না হয়।‘রক্তাক্ত পঙক্তিমালা’ নামক আরেক কবিতায় কামাল চৌধুরী কবিতার আড়ালে একটি চিঠি লিখেছেন। তিনি জানেন, এই চিঠি যার উদ্দেশে লিখেছেন সে কখনো এই চিঠি পড়বে না। তবুও তিনি লিখেছেন, ‘আমার প্রাসাদে এসো, অনুরোধ ফিরে যাবে জানি/তবু আমি দিয়ে যাবো সুবর্ণ আমার আমন্ত্রণ।’ স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধ মানেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই বইয়ের অনেক কবিতাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হাজির আছেন বঙ্গবন্ধু। কবি লিখেছেন, ‘মুজিবুর আজ সারা বাংলার কবি।’ শুধু তাই নয়, এখানে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের প্রতিও কবির কলম থেকে বেরিয়ে এসেছে তীব্র ক্ষোভ ও ঘৃণা। কবি লেখেন, ‘আমার সমস্ত ঘৃণা থুথু আর বুকের আগুন/বাঙালি নামক ঘৃণ্য খুনিদের প্রতি।’  ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া স্বদেশ যে পরবর্তীকালে শত্রুর হাতে বন্দি হয়ে পড়ে তা নিয়েও কবির রয়েছে হতাশা ও আক্ষেপ। তবে শুধু আক্ষেপ এবং হতাশায় ডুবে থাকতে রাজি নন কবি, সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্নও দেখেন তিনি। সেই প্রত্যয়ে তিনি লিখেছেন, ‘ফুলের লাবণ্য মাখা রাতগুলো তাহলে আমার হবে।’ আরেকটি জায়গায় কবি লিখেছেন, ‘আমরা হারিনি। এই দৃশ্য  বিজয়ী জাতির।’ কবির লেখা এই লাইনের মতো করে আমরাও বলতে পারি মানুষের মুক্তি ও স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা কখনোই হারে না।



Buy this book from:



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *