
সাদা বরফ কালো বৃক্ষ
‘সাদা বরফ কালো বৃক্ষ।’ বেঙ্গল পাবলিকেশনস থেকে প্রকাশিত রেজাউর রহমান রচিত এটি একটি মাঝারি সাইজের উপন্যাস। ধ্রুব এষের করা সুন্দর এক প্রচ্ছদমণ্ডিত এই উপন্যাসটির পৃষ্ঠাসংখ্যা ১২৮।
রেজাউর রহমান একজন কথা সাহিত্যিক ও বিজ্ঞান-গবেষক। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কথাসাহিত্যের পাশাপাশি লিখেছেন পাঠ্যপুস্তকসহ অনেক বিজ্ঞানগ্রন্থ ও প্রবন্ধ।
‘সাদা বরফ কালো বৃক্ষ’বইটি মূলত দেশ এবং দেশের বাইরের প্রেক্ষাপটে রচিত একটি উপন্যাস। আলোচ্য বইয়ে মানুষের জীবনের সম্পর্কের ভাংচুর আর টানাপড়েন নিয়ে রচিত হয়েছে এক যথার্থ আখ্যান। প্রেম, বিরহ, বিচ্ছেদ, যন্ত্রণা, সন্দেহ, ভুল বোঝাবুঝি, অভিমান, জীবনের ব্যস্ততা ইত্যাকার মানবিক বিষয় আর অনুষঙ্গে বিন্যস্ত এই বইটি।
উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র আশিক। তার দীর্ঘদিনের প্রেমিকা ও পরে স্ত্রী রুমানা। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নিতে যায় আশিক। গিয়ে পড়াশোনার চাপে তলিয়ে যেতে যেতে একদিন আশিক জানতে পারে যে তার স্ত্রী রুমানা জড়িয়ে পড়েছে এক লাতিন যুবক লিওনেলের সঙ্গে। জানতে পারে তাদের প্রেমের কথা, গোপন অভিসারের কথা। এই ব্যাপারটা তার কাছে অসহনীয় হয়ে পড়ে, ভয়াবহ যন্ত্রণার হয়ে দাঁড়ায়। আর সে অনেক অভিমান আর যন্ত্রণার বুকে নিয়ে লেখাপড়া শেষ না করেই শিকাগো ছেড়ে সরাসরি গ্রামে চলে আসে আশিক, তার বিধবা মায়ের কাছে, রুমানাকে না জানিয়ে। ফলত রুমানা থেকে যায় শিকাগোতেই।
দেশের বাড়িতে আশিকের জীবনে মহুয়া নামে এক নারী আসে। সে আসে অভাবনীয় সুখের ডালি সাজিয়ে। কিন্তু তা যে হয়ে যায় বড় ক্ষণস্থায়ী। নিয়তি সব ভেঙেচুরে তছনছ করে দেয়। তারপর একদিন দীর্ঘ চৌদ্দ বছর পর শিকাগো থেকে আশিকের কাছে চিঠি লিখে রুমানা। সে লিখে তার নিঃসঙ্গতার কথা, তার একাকিত্ব আর যন্ত্রণার কথা। সেই চিঠি পড়ে আশিক স্থির থাকতে পারে না। তার মনে পুরনো প্রেম ঢেউ ভাঙে, সে অনুভব করে রুমানার নিঃসঙ্গ জীবনযাপনের যন্ত্রণাকে। ঠিক করে রুমানার কাছেই ফিরে যাবে। আর আবারও গিয়ে পৌঁছে শিকাগোতে। দীর্ঘ চৌদ্দ বছর পর ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক কি আবার জোড়া লাগবে কিনা লেখক তারই সন্ধান করেছেন একান্ত নিষ্ঠা ও মমতা মিশিয়ে। তিনি প্রেম-ভালোবাসার স্বরূপ খুঁজেছেন মানুষের অন্তর্দাহের নানা সিঁড়ি-সোপানে। উপন্যাসের শেষে আবার আমরা আশিককে দেশে ফিরে আসতে দেখি।