১৯৭১ সাল মহাকাব্যিক যুদ্ধের একটি বছর। এ বছর দেশত্যাগী শরণার্থীদেও ভারতে আশ্রয় নেওয়া ও সেখানে অবস্থান কালীন যে দুর্বিসহ জীবনের মোকাবেলা করতে হয়েছিলো তারই স্মৃতিচারণা এ গ্রন্থ। দীর্ঘ ৫০ বছর পরে স্মৃতির ভা-ার থেকে যেটুকু তাঁরা বলতে পেরেছেন এ গ্রন্থ তারই সারাৎসার। মুক্তিযুদ্ধ ও শরণার্থীজীবন সম্পর্কে বয়োজ্যেষ্ঠদের লেখার মধ্য দিয়ে যুদ্ধকালীন সমাজতত্ত্বের যে ভাষ্য উপস্থাপিত হয়েছে তা পাকবাহিনি ও বাঙালি রাজাকার বাহিনির গণহত্যা, ডাকাতি, খুন, ধর্ষণ, লুট, ধর্মান্তর, নারী ছিনতাই, অগ্নিসংযোগের মতো চূড়ান্ত বীভৎসতার মধ্যে শরণার্থীদের বাঁচবার আপ্রাণ চেষ্টা, বৃহত্তম নৌযাত্রা ও পদযাত্রা, বিভিন্ন জায়গায় গণহত্যা, সংখ্যালঘুর প্রতি পাকাবাহিনির মদদপুষ্টদের আচরণ, সীমান্ত অঞ্চলের কিছু সংখ্যক মানুষের অবৈধ অর্থপ্রাপ্তি ও জীবন জীবিকার উপায়, প্রতিকারহীন লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, বন্দুক উঁচিয়ে কাপড় পেতে নিঃস্ব ও অসহায় শরণার্থীদের কাছে অর্থ দাবি প্রভৃতি বিষয়ের চিত্র উঠে এসেছে। আশা করি মুক্তিযুদ্ধ কালীন মানুষের জীবনযন্ত্রণার কাহিনি বাংলাদেশ ও ভারতে হারিয়ে যাওয়ার হাত থেকে বহুজনের লেখায় উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে। আমার শরণার্থীজীবন : ১৯৭১ অনেক না বলা বেদনার ইতিহাস আজও মানুষের অন্তর্লোকে মৃত্যুহীন জ্বলজ্বল করছে। সেই ইতিহাসকে হারিয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে চেয়েছেন এ গ্রন্থের লেখকবৃন্দ।